সল্টলেকে একদিন

ঝা চকচকে তীক্ষ্ণ তরবারির মতো রোদ। রাস্তায় নামলেই সূর্যকিরণ স্যাঁৎ করে ঢুকে যায় চামড়ার (ত্বকের না, ‘ত্বক’ থাকে শুধু টেলিভিশনে প্রসাধনীর বিজ্ঞাপনে) ভেতরে। যেন পোষাক কারখানা থেকে ধারে সূঁচ নিয়ে বসে আছেন রবিদেব। আম-পাবলিক পেলেই তার শরীরে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন কয়েক হাজার। আর ঘরের কামরাগুলো যেন এক একটা বিরাট মেজবানের হাড়ি। শুধু জল দিলেই মানুষগুলো মাংসের রেজালা হয়ে যাবে। এরই মধ্যে চলছে কাজকম্মো, লেনদেন আর দেখাসাক্ষাৎ।

ভেজে দেয়া এই আবহাওয়ায় তোমার আমার দূর-যোগাযোগ যেন আরো দূর-সম্পর্কে পরিণত। চারপাশে পরমাত্মীয় হয়ে এসেছে লতাগুল্মফুলের সমাহার। নোনাহ্রদের এই শহরটার প্রত্যেক বাড়ির সামনে এক ফালি জমি, এক বা দুই ফুট। তাতে ফুটে আছে কল্কে, নয়নতারা, কাঠগোলাপ আর টগর। কয়েকটা বুনো টগরও আছে। এই যে কয়েকটা নাম বলতে পারলাম, এগুলো তোমারই নাম। সব ফুল, সব তারা আর সব নদীর নামই তুমি। আমার চেতনায় তুমি ঈশ্বরের মতো আসীন, আঙ্গুরবালা।

তীব্র আলো আর সময়াভাবে ক্যামেরা নিয়ে তাদের কাছে যেতে পারিনি এখনও। চিকিৎসক, চিকিৎসালয় আর চিকিৎসা-সহায়ক সব বিষয়াবলী নিয়ে কারবার বসিয়েছি আমি বাঙালির এই দ্বিতীয় নগরে। তারই মাঝে অচিকিৎস্য অসুখ আমার, তুমি আর বন্ধু সন্দর্শন। তারই মধ্যে মাঝে মাঝে একা - সম্পূর্ণ একা। যোগাযোগের এই চরম নির্ভরতার যুগে তাই সঙ্গে আছে মুঠোফোন আর তার নাম্বার।

ভরসাদেবী করিমউদ্দীন আর রহিমউদ্দীনের দেশলাই ও বিড়ির কারখানা পার হয়ে অন্তরেও আসুক একবার। অলমিত বিস্তারেণ।