নববর্ষের বইসমূহ

আঙ্গুরবালা, এবারের খ্রিস্টীয় নববর্ষ অনেকগুলো ভালো ও খারাপ ঘটনার মধ্যদিয়ে গেছে। বহুবছর পর এই নববর্ষে ছিলো না কোনো বন্ধু সকাশে হৈ হুল্লোড়ের আয়োজন। মেঘাচ্ছন্ন হয়ে ছিলে তুমি, লেকের ধারের প্রকৃতি আমার। কিন্তু নববর্ষের সকালেই এসে পৌছালো কয়েকখানা বহুকাঙ্ক্ষিত পুস্তক, যাদের সঙ্গে নিয়ে কবরেও বাস করা যায়। ঘরের দরোজায় নোংরা ফেলে দুর্গন্ধের কাছে নত হতে বলেছে কেউ কেউ। সবকিছুর জন্য প্রয়োজন ছিলো বন্ধুদের দেয়া পরামর্শ অনুযায়ী অসীম ধৈর‌্যের। সেটা পুরোপুরি পেরেছি বলবো না। কিন্তু হৃৎপিণ্ড আর মস্তিষ্ক মোটামুটি কাজ করেছে, এটুকু মনে হয়েছে। আবার দুপুরে মায়ের হাতের রান্না, সে এক অনির্বচনীয় আনন্দের ব্যাপার বটে!

কিন্তু সবথেকে আনন্দ দিয়েছে যে ঘটনা সেটি এই সাতদিনে বলার ফুরসৎ পাইনি নানা কারণে। পয়লা জানুয়ারি দুপুরের দিকে ফোন করেছিলো সহপাঠী বন্ধু Idris। বললো, Kironকে একটু পাঠিয়ে দে। পয়লা দিনের ফুরফুরে ঢিলেঢালা কাজের ভেতরেও কিরনকে অনুরোধটা করলাম। সেও কেন যেন রাজি হয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে। ইদ্রিসের কাছে নিশ্চয়ই কিছু মেওয়া আছে, সন্ধ করি! কিরন ফিরে এলে আমার আনন্দ আর দেখে কে! ও ফিরে এলো অনেকগুলো বই নিয়ে। পঞ্চাশটা বা তারও বেশি। প্রায় সবগুলোই কাজের বই। এদেশে দুই ধরনের বই পাওয়া যায় : পাঠ্যবই আর ‘অপাঠ্য’ বই। স্কুল-কলেজে পড়াই সব ‘পাঠ্য’বই। আর এর বাইরে সবই ‘অপাঠ্য’ বই। এতগুলো অপাঠ্য বই একসাথে! কী আনন্দ, কী আনন্দ!

তুমি তো সবই জানো আমার ভেতরে বাস করে, আঙ্গুরবালা। কেবল আওলাদের মা আর জিলাপি বেগম দিবানিদ্রা থেকে জাগলেই একটু কুয়াশাভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। আঙ্গুরবালা, Mangropedia নামে একটা উইকিপিডিয়া করতে চেয়েছিলাম উৎসর্গ, তুমি আর আমি মিলে। সেই পিডিয়া তৈরি করতে তো তথ্য লাগে। আর তাই গড়ে তুলছিলাম ‘বাদাবন তথ্যকেন্দ্র’ নামে একটা গ্রন্থাগার। এখন সাড়ে চারশো’র মতো বই আছে সেখানে। আর তুমি তো জানো, তথ্য ছাড়া কোনো পিডিয়া তো দূরে থাক, প্রবন্ধই দাঁড়াবে না। তোমার ছোঁয়ায় যদি হয় নিত্য বসবাস, সেদিন নিশ্চয়ই Mangropedia হয়ে উঠবে সত্যি সত্যি বিরাট ভাণ্ডার।

ইদ্রিসের বইগুলো যুক্ত হলো ভাণ্ডারে। খ্রিস্টীয় নববর্ষে Mangropedia’র ভাণ্ডার আরেকটু সমৃদ্ধ হলো। ওকে কি একটা ধন্যবাদ দেবো, আঙ্গুরবালা?